ফেরারী কথারা সেদিন ঘরে ফিরছিলো। অনেকদিনের পরে। সেই যে ঝরাপাতা অরণ্যের ভিতর দিয়ে, পথহীন পথে তারা পালিয়ে গেছিলো, দৌড়ে দৌড়ে পালাচ্ছিলো কুয়াশাভরা অন্ধকারে, পিছনে গুলির শব্দ ছিলো, সঙ্গীরা আসতে পারলো না পড়ে রইলো দেখার সময় ছিলো না-সেই সময়টা এখন স্মৃতিমাত্র। অতীত, মৃত অতীত।
মৃত কি? ঠিক বর্তমানমুহূর্তের আগে প্রত্যেকটা মুহূর্তই তো মৃত, ওষধি গাছের মতন নতুন মুহূর্তের জন্ম দিয়েই মরে যায়। নতুন সময়ের টুকরোগুলো কি কখনো পুরানো সময়খন্ডের জন্য স্মৃতিকাতর হয়? জন্মাতে জন্মাতে আর মরে যেতে যেতেই তো ওদের সময় চলে যায়!
আজ ভোরে ফেরারী কথারা ফিরছে। তাদের পথ জুড়ে আজ শালমঞ্জরী ঝরে পড়ছে, মহুয়াফুলের গন্ধ ভাসছে হাওয়ায়। অপরাজিতা আকাশের কপাল লাল থেকে কমলা, কমলা থেকে সোনালী। তারপরে সূর্য। আহ, কতদিন পরে। কোথা থেকে যেন একটা চেনা সুগন্ধ আসে একঝলক, নিমন্ত্রণের বাঁশির সুরের মত।
ছোট্টো একটা কচি হাসি
একবার আমাকে ফিরিয়ে এনেছিলো
অচেনা ঝড়ের বিভীষিকা-রাত থেকে
চেনা ভোরের অশ্রু টলমল আলোয়।
বুটি বুটি নকশা তোলা
আকাশগন্ধী নীল তাঁত শাড়ীখানা
একবার আমাকে ফিরিয়ে এনেছিলো-
ধূসর চিরবিস্মরণ থেকে
প্রতিদিনের হাসিকান্নার ঢেউয়ে।
শিরতোলা দু'টি ঝিনুকের খোলা সাজানো ছিলো
দেখনবাক্সের কাচের ঢাকনার ভিতরে,
কেজানে কোনোদিন হয়তো ইচ্ছেমুক্তো ছিলো
ওদের কবেকার ভুলে যাওয়া শরীরে!
একদিন ওদের দিকে তাকিয়েই
ফিরে এসেছিলাম ক্ষণভঙ্গুর সংসারে আবার
ঝড়ের আকুল সমুদ্রকে বিদায় জানিয়ে
বৃথাবেদনার অশ্রু-অর্ঘ্যে।
Saturday, January 29, 2011
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment