Tuesday, August 12, 2014

অফুরাণ আকাশে যে নক্ষত্রের ঘর

আজকে বিকালে মেঘ সরে গিয়ে দেখা দিয়েছে রোদ। আকাশ কোমল নীল, রোদ্দুরে সোনারঙ। সূর্যপিয়াসী প্রাণগুলি আজ হারানো সুর খুঁজে খুঁজে বের করে তোড়া বাঁধে, বেসুরো শুকনোপাতা ফেলে দিয়ে। ভুলে যাওয়া শরতের মতন কাশফুলী মেঘেরা ভাসে আকাশে, ডানামেলা পাখির মতন উড়ে যায় সবুজ অরণ্যের দিকে, ওদের দিগন্তপ্রিয় ডানার নীচে তরল জলের ধারার মতন গলে পড়ে দূরত্বের কাঠিন্য।

খুব ঈর্ষা হয় ওদেরকে। কেমন দিগন্ত থেকে দিগন্ত থেকে দিগন্তে উড়ে যায় ওরা, শীত ছেড়ে বসন্তের দিকে! আবার ছায়া পড়ে আসে, সূর্যের মুখ ঢেকে দিয়ে ঝুঁকে পড়ে চুম্বননত মেঘমুখ, পৃথিবীর মুখের দিকে। সাঁঝ নামে।

হঠাৎ‌ খুঁজে পাওয়া প্রিয় গল্পটা খুলি, গল্পটার নাম "জ্যোৎ‌স্নাপৃথিবী"। প্রথম পড়ার মতই আবার চমকে উঠি। এত সুন্দর কাহিনি লেখা যায়? এত আকুতি ধরা পড়ে মানুষের কঠিন ভাষার আখরে? এই গল্পটা পড়ার আগে আমার দুনিয়া অন্যরকম ছিলো, এখন অনেক অন্যরকম। যিনি লিখেছেন অন্তর নিংড়ে, তাঁকে ধন্যবাদ জানানোর ছিলো, কৃতজ্ঞতাও, কিন্তু কোথায় পাবো তাঁকে? এমন কত ঋণ রয়ে যায় এ মাটির জীবনে, কেজানে! আলোর মুখ ঢেকে দিয়ে আবার আবছায়া নেমে আসে। জলের আবরণকেই কি কুয়াশা বলে?

"এই ছায়ামায়াভূমি এই জলস্থল
সুগভীর ও দু'চোখে আলো টলটল-
কিছুই তো যায়না ছোঁয়া
কুশিকুশি ধোঁয়া ধোঁয়া -
সে মায়াবী দেশ শুধু অনুভবময়,
নীলছায়া এ জীবন, নীলাভ সময়।

ছায়ামায়া পার হয়ে আরো আরো দূরে-
সোনালী আলোর দেশে অচেনা নূপুরে,
স্বপ্ন-পালক লেগে ব্যথা জেগে ওঠে
হাসি ও কান্না আঁকা স্ফটিকের ঠোঁটে।
পাহাড়ের পথ বেয়ে নেমে আসে ঝোরা
সারাদিন রিনরিন বইছে অঝোরা।
কে যেন হারিয়ে গেছে কোন্‌ ছায়াদেশে,
কে যেন বিদায় নিলো অমলীন হেসে-
আবার হবে কি দেখা মায়াবী বিকালে
সূর্যকাঁ‌পন জাগা নীলহ্রদ-শেষে?

চলে গেছো, ফিরে এসো,ফিরে এসো তুমি-
জলের নূপুরে বেজে ওঠো,কথা বলো-
অফুরাণ আকাশে যে নক্ষত্রের ঘর
সেঘরের জানালায় দীপ হয়ে জ্বলো....

No comments: