Thursday, May 22, 2014

সাদা পাখি হয়ে উড়ে এসে ঈশ্বরী

নদীর একেবারে ধারেই গাছটা। পাড় থেকে জলের উপরে ঝুলে থাকা শিকড় কাঁপে ঢেউ লেগে লেগে। মাঝে মাঝে জলের জোর ঝাপটা এসে ভিজিয়ে দেয় ওদের। ঝাপটা শেষ হলে ফোঁটা ফোঁটা মুক্তোর মতন জলবিন্দু ঝরতে থাকে। স্নান-অবশেষ জলকণা। অনেক উপরে রোদ্দুরে কাঁপে ওর নতুন পাতারা। নরম সবুজ রঙ তাদের। ওরা জন্মেছে এই বসন্তদিনে।

যেখানে ক্লান্ত, আহত ঈশ্বর বসে আছে নতমুখে-

সাদা পাখি হয়ে উড়ে এসে ঈশ্বরী

ডানার হাওয়ায় জুড়িয়ে দেয় সব তাপ-

যত্নে মুছিয়ে দেয় অশ্রুকণা।



এখন অসংখ্য ভ্রমরের গুঞ্জন তাদের বাগানে

পাখিরাও সঙ্গীতমুখর।

দীর্ঘ অন্ধকার মৃত্যুবিষাদদীর্ণ শীতশেষে

আবার এসেছে সোনালী ভালোবাসার সকাল।

সেইসব দিন-কোলাহল ম্লান হলে সন্ধ্যাতারাটির মতন

ধীরপায়ে জলছাপ রেখে রেখে আসে যে,

তার মুখ স্পষ্ট করে দেখিনি কখনো।

তার ধূপছায়া রঙের শাড়ী, পাড়ে সবুজ কল্কা-

বিষন্ন চোখ, শঙ্খের মতন সাদা কপাল

চূর্ণকুন্তলে লেগে থাকা বিন্দু বিন্দু জল-

সন্ধ্যাস্নানের অবশেষ।



ওকে কোনোদিন কথা বলতে শুনিনি

কোনোদিন গান করতে শুনিনি-

জানি না ওর কন্ঠস্বর কেমন।

শুধু স্বপ্নের ভিতরে সেই অশ্রুত স্বর

কচি পাখির ডানার মতন কাঁপে।

ও ই কি সেই সাদা পাখি হয়ে উড়ে আসা ঈশ্বরী?

আদিগন্ত করুণা-ছলছল চোখে চেয়ে

আপন ডানায় মুছে নেয় আহত ঈশ্বরের বেদনা?



No comments: