কিছু কথা আগুনের কাছে বলি। ওরা কিছু বা নিঃশেষে পুড়ে যায়, কিছু বা মিশে যায় লকলকে শিখায়, কিছু বা ধোঁয়া হয়ে যায়। ওদের আর দেখতে পাই না।
কিছু কথা নদীর কাছে বলি, নদীর পাশে ঝুঁকে পড়া অশ্বত্থের মূলে চুপ করে বসে বসে বলি নদীকে। স্রোতের টানে ফেনিয়ে ফেনিয়ে ওঠে নদী, কলকল কুলকুল করে নিজেও কত কথা বলে। আমার বলা কথা ঘূর্ণীতে ঘোরাতে ঘোরাতে কেজানে কোথায় নিয়ে যায়, হয়তো বা দূরের সমুদ্রে, যে সমুদ্র নাকি নীল।
কিছু কথা বাতাসকে বলি। গ্রীষ্মের বিকেলের মধুর দক্ষিণা হাওয়াকে, অথবা হেমন্ত গোধূলির শিরশিরে বিষন্ন হাওয়াকে অথবা বর্ষার বৃষ্টিমগ্ন দুপুরের মৌসুমী হাওয়াকে। সেইসব কথাও উড়ে চলে যায়, কেজানে কোন্ দূর শহরে বন্দরে পথেঘাটে অথবা অজানা উপত্যকায়।
কিছু কথা মাটিকে বলি। মাটি খুঁড়ে সমাধি দিই তাদের। সর্বংসহা মৃত্তিকা নিশ্চুপে গ্রহণ করে সব। হয়তো একদিন কোনো কথাবীজ থেকে বার হয়ে আসবে কোমল সবুজ একটি ভীরু অঙ্কুর, যুগলপত্র মেলে দেবে আকাশে, উজ্জ্বল রোদ্দুরের আশীর্বাদে হয়তো ফনফনিয়ে উঠবে। কেজানে!
কিছু কথা কারুকে বলা হয় না
বুকের ভিতর-কুঠুরিতে যেখানে গহীণ অন্ধকার-
সেখানে ওরা বন্দী হয়ে আছে।
মাঝে মাঝে ওদের অস্থির
ডানার ঝাপটানি শুনি।
একদিন চৈত্রশেষের রাতে
আকাশ যখন তারায় তারায় ঝমঝম করছে-
তখন শাণিত একটি ফলা দিয়ে
খুলে দেবো ঐ অন্ধকার কুঠুরির দরজা।
ঢেউতোলা লোহিত সমুদ্র পিছনে ফেলে
ওরা উড়ে চলে যাবে তারাভরা আকাশে-
আর ফিরবে না।
Thursday, May 8, 2014
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment